‘একটি ফুলকে বাঁচাবার জন্যে যুদ্ধ করি’

দেশপ্রেম (ডিসেম্বর ২০১১)

মিজানুর রহমান রানা
  • ৩৮
  • 0
  • ১৩৪
এক.
আজ বেশ আগে আগেই স্কুলে এসে গেলাম আমি। কারণ, আজ আমাদের প্রাইভেট আছে। আমি মুক্তা, ইরফান, রুমা, মারিয়া একসাথে এক ব্যাচে জগন্নাথ স্যারের কাছে ক্লাশ শুরুর এক ঘণ্টা আগে প্রাইভেট পড়ি। স্যার সপ্তাহে তিনদিন পড়ান। বাকিদিনগুলোর ওই সময়টায় তিনি নাকি নাক ডেকে ঘুমান। তারপর ক্লাসের সময় হলে তিনি পড়িমড়ি করে স্কুলে চলে আসেন।

আমি ক্লাসরুমে বসে আছি। বেশ আগে আসায় এখনও সহপাঠী কাউকে দেখছি না। কি যেনো ভাবছিলাম বসে বসে। এমন সময় পেছন হতে কে যেনো আমার চোখদুটো চেপে ধরলো। আমি বললাম, 'কে রে?'

সে হাসলো। আমি বললাম, 'মারিয়া তুই নাকি?'
সে হাতটি সরিয়ে নিলো। দেখলাম আমার পেছনে ইরফান দাঁড়িয়ে আছে। মিটিমিটি হাসছে।

আমি বেজায় রাগ করলাম। বললাম, 'এভাবে চোরের মতো কেনো আমার আমার চোখ দুটো চেপে ধরেছিস্? তুই পুরুষ না? মেয়েদের গায়ে হাত দিতে তোর লজ্জা করে না?' আমি মৃদু কপট রাগের অভিনয় করলাম।

ইরফান আমার সামনে এসে দাঁড়লো। সে বললো, 'মুক্তা তুই রাগ করেছিস? আরে দেখ, আমি এখনও পুরুষ হতে পারিনি। কারণ আমার এখনও আঠার বয়স পূর্ণ হয়নি। আমি এখনও না-বালক। হা হা হা।' ইরফানের মুখে হাসি লেগেই আছে। আমি বোকার মতো চেয়ে রইলাম যেনো।

ইরফান বললো, 'শোন মুক্তা। তুই বললি মেয়েদের গায়ে হাত দিয়েছি আমি। আমি কি গায়ে হাত দিয়েছি নাকি? আমি তো তোর চোখে হাত দিয়েছি। গায়ে হাত দেয়া আর চোখে হাত দেয়া এক কথা নয়রে। আমি তোর ক্লাসমেট, বন্ধু। বন্ধু হয়ে বন্ধুর চোখে হাত দেয়া অপরাধ নয়। আর তুই যদি কিছু মনে করিস্... তাহলে...।

ইরফান একটি অবাক কাণ্ড করলো। আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম ওর বিপরীতমুখী চরিত্র দেখে। ও ক্রমে ক্রমে তার দুটো হাত দিয়ে স্বীয় কান ধরলো। তারপর দুটি হাঁটু মাটিতে গেঁড়ে আমার সামনে কান ধরে বললো, 'অপরাধ যদি হয়েই থাকে, এবার তাহলে মাপ করে দাও দেবী মুক্তা।'

আমি খিলখিল করে হেসে ওঠলাম। 'দেবী, দেবী, আমি দেবী! আমাকে দেবীর মতো লাগছে? কি যে বলিস তুই ইরফান!' আমি ইরফানের হাত ধরে টান দিয়ে তাকে মাটি হতে টেনে তুললাম। তারপর বললাম, 'ওই নাবালক ছেলে, কান ছেড়ে দাও এবার। তোমার শাস্তি হয়ে গেছে। তুমি এবার মুক্ত।'

ইরফান হাসলো। বললো, 'শুধুমাত্র মুক্তারাই পারে মানুষকে অপরাধ ক্ষমা করে মুক্ত করে দিতে। তাই তো তোমার নাম মুক্তা। সত্যি বলছি মুক্তা, আজ তোকে না একদম দেবীর মতো লাগছে। মনে হচ্ছে তোকে একটা স্যালুট করি। নমস্কার মুক্তা।'

আমার হাসির মাত্রা আরো বেড়ে গেলো। আসলে ইরফানটা একটা পাগল। পাগলের মতোই পাগলামি করে সারাক্ষণ ক্লাসে সবার সাথে। ছেলেটা একদম সহজ-সরল।

ঠিক এমন সময়ই আমার অন্যান্য ক্লাসমেটরা এলো। এরপর এলেন জগন্নাথ স্যার। আমি আর ইরফান দু'জনেই বসে গেলাম টেবিলে। পাঠে মনোযোগী হলাম।

স্যার বললেন, 'কিরে ইরফান তোরা দু'জন কি আজ একসাথে বাসা থেকে এসেছিস্ নাকি?' স্যারের কথা শুনে অন্য সহপাঠীরা হাসলো। স্যার দুম করে টেবিল চাপড়ে বললেন, 'এই চুপ সবাই! আমি কি গোপাল ভাঁড় নাকি যে, তোমরা আমার কথা শুনেই হাসবে? দেখি দেখি সবাই গতকালের বাড়ির কাজগুলো করেছ কি-না?'




দুই.
বাইরে প্রবল বেগে বৃষ্টি হচ্ছে। শুয়ে শুয়ে ভাবছি সেই দিনগুলোর কথা। তখোন কতোই আর বয়স ছিলো। মাত্র পনেরো-ষোলো হবে হয়তো! আমি তখন ক্লাশ নাইনের ছাত্রী। আমাদের পাশর্্ববতর্ী বাসায়ই ছিলো ইরফানদের ফ্যামিলি।
আমি আর ইরফান একসাথে স্কুলে যেতাম। একই ক্লাসে পড়তাম। দু'জনের মধ্যে ছিলো একটি সুন্দর বন্ধুত্বের সম্পর্ক। কখনও আমাদের মাঝে ঝগড়াঝাটি হতো না।
একদিন ক্লাস শেষে ইরফান তার খসড়া খাতাটি আমার সামনে মেলে ধরলো। বললো, 'দেখতো মুক্তা কবিতাটি কেমন হয়েছে? দৈনিক ইত্তেফাকে ছাপাবো।'
'বাব্বা, তুই তো জবর কবি হয়ে গেছিস্ রে ইরফান।' আমি অবাক হয়ে বললাম।
'আরে পড়েই দেখ না কবিতাটা, তারপর করবি সমালোচনা।' ইরফান বললো।
আমি ওর লেখার খাতাটা হাতে নিলাম। কিন্তু তার লেখাটি পড়ে আমার মুখটা ততক্ষণে পাংশুবর্ণ ধারণ করেছে। সে লিখেছে-
মুক্তা,
দিনের আলোর মত ভেসে উঠে
তোমার প্রতিচ্ছবি আমার হৃদয়ে গভীরে
অজান্তে মনের; আমি তোমায় ভালোবাসি।
আমি জানি, তুমি আমাকে ভুল বুঝবে
কারণ, জীবনের এই প্রারম্ভে
আমার ভালোবাসা হয়তো মরিচীকা
অথবা আবেগের এক বালখিল্য ফসল
তবুও আমি ভালোবাসি, ভালোবাসি তোমায়।

আমি অপলক নেত্রে কয়েক মুহূর্ত ইরফানের দিকে তাকিয়ে রইলাম। ইরফান বললো, 'কিরে, তুই ভয় পেয়ে গেছিস্? ভয় পাস্নে। আসলে লেখাটা আমার না। আমার এক বন্ধুর। আমি শুধু 'মুক্তা' নামটা লাগিয়েছি। বলা যায় হাওলাত করেছি। হা হা হা। আমি হাওলাতি কবি, তাই না রে?'
ইরফান নিজেকে 'হাওলাতি কবি' বললেও আমি জানি কবিতাখানি সে নিজেই রচনা করেছে। শুধু মনের গভীর ভালোবাসা আমাকে লজ্জ্বায় বলতে পারেনি বলেই মিথ্যের আশ্রয় নিয়েছে সে। কিন্তু ইরফান জানতো না, আমিও তার মতোই তাকে ভালোবাসি, কিন্তু আমিও পারিনি অকপটে স্বীকার করতে আমার ভালোবাসা।



তিন.
দেশে তখন একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ। বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে সাত মার্চে বিশাল জনসভায় ভাষণ দিলেন। লাখ লাখ জনতার সমাবেশ। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ জনতা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনলো। বঙ্গবন্ধু সবাইকে যার যা আছে তা-ই নিয়ে প্রস্তুত থাকতে বললেন। ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার নির্দেশ দিলেন। আরো বললেন, আর যদি একটি বুলেটও যদি চলে, একজন মানুষও যদি খুন হয় তাহলে তিনি পাকিস্তানীদের সাথে কোনো আপোস করবেন না। তিনি আরো বললেন, 'এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, আমাদের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।' জনগণ সমস্বরে শ্লোগান তুললো, 'জয় বাংলা,' 'জয় বাংলা'।

এরপর বঙ্গবন্ধুর সাথে পশ্চিম পাকিস্তানীদের শুরু হয় বাকযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধু রক্ত ও লাশ ডিঙ্গিয়ে এসেম্বলি যেতে চাইলেন না। তিনি রইলেন আপোসহীন। এর মধ্যে শুরু হলো পশ্চিম পাকিস্তানীদের নানা ষড়যন্ত্র। আরো শুরু হলো পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের পূর্ব পাকিস্তানে আনাগোনা।



চার.
২৫ মার্চ ১৯৭১। বাইরে হঠাৎ করে প্রচণ্ড আওয়াজ শুনতে পেলাম। তারপর সম্মিলিত মানুষের চিৎকার, কোলাহল। অজানা আশঙ্কায় বুকটা কেঁপে উঠলো। ঘড়ি দেখলাম, রাত প্রায় একটা। মা আমার রুমে ছুঁটে এলেন। জিজ্ঞেস করলেন, 'ভয় পেয়েছিস্ মা?'
আমি জিজ্ঞেস করলাম, 'মা কিসের এতো আওয়াজ? কিসের আর্তনাদ-কোলাহল?'
মা বললেন, 'সম্ভবতঃ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। পাকিস্তানীরা হয়তো মানুষ মারছে। কাল তোর বাবা পত্রিকায় দেখতে পেয়েছে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অনেক মিলিটারী এসেছে।'


পাঁচ.
পরদিন সকাল। আমাদের পাশের বাড়িটা সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। অনেক মানুষের ছোপ ছোপ রক্ত, মৃত লাশ। এই দিনটা হচ্ছে ২৬ মার্চ ১৯৭১। ঢাকা থেকে সবাই পালাচ্ছে। পাকিস্তানীরা যাকে পাচ্ছে নির্বিচারে হত্যা করছে। সেই সাথে যোগ দিয়েছে রাজাকার নামের বিবেক বর্জিত নরপশুরা। তারা মা-বোনদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করছে।



ছয়.
ইরফানদের ফ্যামিলি তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে চলে যাবে। ইরফান বিদায়বেলায় আমার কাছে এসেছিলো। সে বলেছিলো, 'মুক্তা, জানি না আর কোনোদিন তোমার সাথে আমার দেখা হবে কি-না। কারণ পাকিস্তানীরা এই দেশ আক্রমণ করেছে। আমাদেরকে ওরা বাঁচতে দেবে না। তবে আর যদি কোনোদিন দেখা না হয়, আমার এই ছোট্ট কাগজখানা তোমার কাছে থাকবে।' এই বলে সে একটি চিরকুট ভাঁজ করে আমার হাতে দিলো।

আমি বললাম, 'ইরফান তুমি গ্রামে গিয়ে কী করবে?'
ইরফান নিরুত্তাপ কণ্ঠে বললো, 'দেশরক্ষার জন্যে, দেশের মানুষের মুক্তির জন্যে মুক্তিবাহিনী গঠিত হচ্ছে। সবাই মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিচ্ছে। আমিও যাবো। এই দেশ থেকে পশ্চিম পাকিস্তানী নরপশুদেরকে নিজেদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে হলেও আমরা উচ্ছেদ করবো। আজ পরীক্ষার সময় এসেছে। দেশমাতা আমাদেরকে অনেককিছু দিয়েছে। আমাদেরকে এখন তার প্রতিদান দিতে হবে, মাকে বাঁচাতে হবে। মায়ের আব্রু-ইজ্জত রক্ষা করতে হবে। আমার মায়ের ইজ্জতই যদি না থাকে তাহলে আমার বেঁচে থেকে কী লাভ বলো? আমার মা করুণ কণ্ঠে কাঁদছে, ইরফান, ইরফান আমাকে বাঁচাও। ওরা আমার সন্তানদেরকে মেরে ফেলছে, আমার বুক থেকে রক্ত ঝরাচ্ছে। আমি সইতে পারছি না ইরফান। তোমরা এগিয়ে এসো। আমাকে রক্ষা করো। আমি তোমাদেরকে আলো-বাতাস, মায়া-মমতা দিয়ে লালন-পালন করেছি। আজ তোমরা বড়ো হয়েছো। তোমার মাকে আক্রমণের প্রতিশোধ তোমাদেরকে নিতেই হবে। তোমার মাকে হানাদারদের কবল থেকে রক্ষা করতেই হবে। ইরফান এসো এসো..।'

আমি ইরফানের জ্বালাময়ী আবেদনপূর্ণ কথায় অশ্রু সংবরণ করতে পারিনি। তবুও তাকে বললাম, 'ইরফান কী দরকার তোমার যুদ্ধে যাবার। দেশে সাড়ে সাত কোটি মানুষ রয়েছে, তারাই তো দেশকে রক্ষা করার জন্যে যথেষ্ট। তুমি একজন যুদ্ধে না গেলে কি যাবে আসবে?'

ইরফান হাসলো। সেই পাগল করা হাসি। তারপর হঠাৎ করেই গম্ভীর হয়ে গেলো সে। বললো, 'আমি যুদ্ধে যাচ্ছি শুধুমাত্র একটি ফুলকে বাঁচাবার জন্যে। বাংলা মা আমার কাছে নিষপ্রাণ নয়, যেনো সদ্য ফোটা একটি ফুল। আর সেই ফুলের পাপড়িগুলো হলাম আমরা। যদি ফুলগাছটি মরে যায়, পাপড়িগুলোও বিবর্ণ হয়ে যাবে। তাই আমাদের মতো দেশপ্রেমিক সন্তানদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই দেশমাতাকে রক্ষা করতে হবে। হয় দেশ স্বাধীন করো, না হয় মৃতু্যকে হাসিমুখে মেনে নাও। এই হবে আমাদের প্রতিজ্ঞা। এ প্রতিজ্ঞা থেকে ইহলৌকিক কোনো স্বার্থ আমাদেরকে টলাতে পারবে না মুক্তা।'
ইরফান চলে গেলো। আমি বিষণ্নচিত্তে তার গমনপথের দিকে আনমনা হয়ে তাকিয়ে রইলাম।



সাত.
ইরফান চলে যাবার পর ধীরে ধীরে আমি তার দেয়া চিরকুটখানা খুললাম। দেখলাম সেই কবিতাটি। তবে কবিতার শেষে সে লিখেছে 'মুক্তা, কবিতাটি আমারই লেখা। হাওলাত নয়।'
আমি মনে মনে বললাম, ইরফান তুমি তো তোমার মনের কথা লিখে গেছো। আমি কিন্তু তোমাকে বলতে পারলাম না আমি তোমায় ভালোবাসি। যদি কোনোদিন দেখা হয়, যদি তুমি যুদ্ধশেষে বাংলা মায়ের কোলে ফিরে আসো তাহলে হয়তো সেদিন আমি উচ্চস্বরে বলবো, ইরফান আমি তোমায় ভালোবাসি। আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হবে সে কথা।


আট.
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর।
দেশ স্বাধীন হলো। লাখ লাখ মানুষের মৃত লাশের ওপর দিয়ে হেঁটে এসে পশ্চিম পাকিস্তানীরা আত্মসমর্পণ করেছে।
দেশ স্বাধীন হবার পর পরিচিত কতোমুখ দেখলাম যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে এসেছে। কিন্তু ইরফানকে দেখতে পেলাম না। সে আর ফেরেনি। তার সাথে আর কোনোদিন আমার দেখা হয়নি।

আমার বিয়ে হলো। আমার কোল জুড়ে এল দু'টি সন্তান। কন্যা সাহারা ও ছেলে স্বপ্নীল। আমার স্বামী ব্যবসায়ী। আমি ওকে একদিন বলেছিলাম আমার ক্লাসফ্রেন্ড ইরফানের কথা। সে বলেছিলো, মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকায় খোঁজ করবে, করেছিলও। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকায় তার নাম নেই। তাহলে কি ইরফান মুক্তিযুদ্ধে যায়নি?'
না। আমার বিশ্বাস সে গিয়েছিলো এবং শহীদও হয়েছিলো। কারণ তার সাথে ছিলো একটি প্রত্যয়, 'ভালোবাসা'। এই ভালোবাসা হয়তো 'দেশের জন্যে', নয়তো 'একটি ফুলকে বাঁচাবার জন্যে।'


নয়.
দেশপ্রেমিক ইরফানরা দেশপ্রেমের অমর বাণী বুকে ধারণ করে দেশমাতৃকার জন্যে মরে, শহীদ হয়। হয়তো কেউ তাদের খবর রাখে, কেউবা রাখে না। হয়তো মুক্তিযোদ্ধা, শহীদদের কাতারে তাদের নাম ওঠে না। কিন্তু পবিত্র দেশমাতা তাদের ভুলে না, এই যেমন ভুলিনি আমি।
আমি আমার সন্তানদেরকে তাঁর দেশপ্রেমের অমর বাণী শুনিয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করি। প্রতি বছর বিজয় দিবস এলেই আমি আমার সন্তানদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাই। শোনাই ইরফান নামের এক মুক্তিযোদ্ধার কথা, তাঁর দেশপ্রেমের কথা। কারণ, বিজয় দিবসের গল্প আমাদের সন্তানদেরকে অবশ্যই দেশের বিজয়ের পথে অনুপ্রাণিত করবে।
হঁ্যা, তবে কোনোদিন যদি দেশপ্রেমিক ইরফানের খোঁজ পাই বা তার সমাধির সন্ধান পাই তবে তাকে অথবা তাঁর সমাধির পরে থাকবে আমার একটি স্যালুট। আমার মনে থাকবে, এই দেশপ্রেমিক মানুষটি একদা আমাকে, দেশের মানুষকে, দেশমাতাকে ভালোবেসেছিলো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রোদের ছায়া গল্পটি পড়া একটু সময়সাপেক্ষ কিন্তু ইরফানের লেখা কবিতাটি ছোট করে পরে ফেললাম,.....শেষের কথা গুলো খুব মর্মস্পর্শী
মিজানুর রহমান রানা দীর্ঘ একটি মাস ধরে আমার গল্পটি বিজ্ঞ পাঠকরা পাঠক করে আলোচনা-সমালোচনা করেছেন। তাদের সবার প্রতি শ্রদ্ধা ও অফুরন্ত শুভ কামনা।
দীপক সাহা আমি স্যালুট দিলাম দু'জনকে। ইরফানকে আর গল্পাকারকে।
প্রজাপতি মন অসাধারণ লাগলো আপনার এবারের গল্পটি। ইরফানের প্রতি একইসাথে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অনুভব করছি। তার এই কথাগুলো ভালো লেগেছে, "'আমি যুদ্ধে যাচ্ছি শুধুমাত্র একটি ফুলকে বাঁচাবার জন্যে। বাংলা মা আমার কাছে নিষপ্রাণ নয়, যেনো সদ্য ফোটা একটি ফুল। আর সেই ফুলের পাপড়িগুলো হলাম আমরা। যদি ফুলগাছটি মরে যায়, পাপড়িগুলোও বিবর্ণ হয়ে যাবে। তাই আমাদের মতো দেশপ্রেমিক সন্তানদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই দেশমাতাকে রক্ষা করতে হবে। হয় দেশ স্বাধীন করো, না হয় মৃতু্যকে হাসিমুখে মেনে নাও। এই হবে আমাদের প্রতিজ্ঞা। এ প্রতিজ্ঞা থেকে ইহলৌকিক কোনো স্বার্থ আমাদেরকে টলাতে পারবে না মুক্তা।'
মোঃ শামছুল আরেফিন গল্প পড়ে আবেগাপ্লুত হলাম। দেশপ্রেমিক ইরফানরা এভাবেই চলে যায় নিভৃতে। অনেক দিয়ে যায় অনায়াসে। অথচ তার প্রতিদান চায়না। শুধু মুক্তা নয় ইতিহাঁসের পাতায়ও তাদের নাম লিখা থাকা উচিত। অথচ সেই সুযোগটাও হয়না অনেকের। তবে যে মার বুকে জন্ম, যে মায়ের কোলেই আবার ফিরে যেতে হয় তিনি নিশ্চয়ই জানেন ইমরানের মত প্রতিটি বীরের রক্ত গাঁথা শোককথা। ( আমার বলা ঠিক হবে কিনা কারণ আমি আপনার চেয়ে সবকিছুতেই অনেক জুনিয়র। গল্পে পরিচ্ছেদের সংখ্যা আমার কাছে মনে হয় অকারণেই বাড়ানো হয়েছে। যেমন তিন, চার, পাঁচ পরিচ্ছেদগুলোতে একই বিষয়ে কথা বলা হয়েছে কিংবা একই কাহিনী ব্যাপিত হয়েছে। এগুলোকে তাই এক পরিচ্ছেদে রাখা যেত। তদ্রুপ ছয়+সাত মিলে একটা এবং আট+ নয় মিলে একটা পরিচ্ছেদ করলে আরো অনেক বেশি সুন্দর হত। তবে এ ক্ষেত্রে আপনার সিদ্ধান্ত এবং যুক্তিই আমি মানব। আমি শুধু আমার চোখে দৃষ্টিকটু মনে হল তাই শেয়ার করলাম। প্লীজ কিছু মনে করবেননা।) অনেক অনেক শুভ কামনা রইল। ভাল থাকবেন।
তাওহীদ হাছান অসাধারণ কাহিনী, অনেক ধন্যবাদ রানা ভাই সুন্দর গল্প উপহারের জন্য
Azaha Sultan রানা ভাই, অসাধারণ......তবে এরকম হাজারো ইরফানের নাম মুক্তিযুদ্ধের খাতায় উঠে নি.....দেশপ্রেমিক ইরফানকে লাল সালাম......অর্থাৎ, রানাকে....ধন্যবাদ দাদা....
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি Rana tomar golpota mon diye porlam vai. sei mukti judhdher chetonay notun kore abar ujjibito holam. thank you...............................
পাঁচ হাজার অসাধারণ কাহিনী, সুন্দর গল্প। মুক্তিযুদ্ধের সব কাহিনীই আবেগী হয়। আপনারটা বেশি আবেগী হয়েছে।
M.A.HALIM বরাবরের মত এবার ও আপনার গল্প অসাধারণ। অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো।

০৩ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪