কম্বল-কথা

শীত / ঠাণ্ডা (ডিসেম্বর ২০১৫)

Salma Siddika
মোট ভোট ১৯ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৪.৯
  • ২৩
বাড়ীর সামনে একটুকরো বাগান, সেখানে মোড়ায় বসে রোদ পোহাচ্ছে হাবিব। তার গায়ে ঘিয়া রঙ্গা ভারী চাদর, তারপরও শীত মানছে না। পিঠে রোদের আঁচ বেশ আরাম লাগছে।
অন্যদিনের মতই বাড়ীর সবাই আজও ব্যস্ত। বাচ্চারা স্কুলে গেলো, স্কুল থেকে ফিরে দু তিনটা কোচিং ক্লাস। বাড়ীর মালিক কামরুলের স্ত্রী মারিয়াম বাচ্চাদের স্কুলে কোচিংএ নিয়ে যায়। যখনি মারিয়ামের সাথে দেখা হয় তখনি দেখা যায় মারিয়াম ফোনে ব্যস্ত হয়ে কথা বলছে। হাবিবকে ইশারায় সালাম দিয়ে সড়ে পরে।
বাড়িতে দুইটা ড্রাইভার, কাদের আর শফি। কাদের বাচ্চাদের স্কুলের ডিউটি করে , সে বাড়ীর পেছনে স্টাফ কোয়ার্টারে থাকে। হাবিবের ঘরও ওখানে। স্টাফ কোয়ার্টারের দুইটা ঘর স্টোরেজ হিসাবে ব্যবহার হয়, ঘরের পুরানো ফার্নিচার, পুরানো টিভি, ফ্রিজ, কাপড় কি নেই সেখানে। বছরের পর বছর ধরে পুরোনো জিনিসে দুটো ঘর ভর্তি। বাকি একটা ঘরে হাবিব আর কাদের থাকে।
'চাচা মিয়া করেন কি?'
কাদের গাড়ি পরিষ্কার করতে করতে হাবিবকে জিজ্ঞেস করে।
'দেখস না? রইদ পোহাই। '
'এত কিসের ঠান্ডা আপনের? ঢাকা শহরে কি এখন ঠান্ডা আছে?'
কি জানি! হাবিবের কেন যে এত ঠান্ডা লাগে! কাদের কি সুন্দর পাতলা একটা শার্ট পরে ঘুরছে। অবশ্য কাদেরের বয়স কম , তাই রক্ত গরম।
'চাচা, আমি ভাবতেছি মেডামেরে বইলা পাশের রুমটা খালা করাইয়া আপনেরে ওই রুমে সেট কইরা দিমু, একরুমে ঘুমান যায় না। আপনের লাগে ঠান্ডা, ফ্যান ছাড়তে দেন না। আমি গরমে জুবজুবা হই।'
হাবিব কিছু বলে না, মনে মনে ভাবে, 'আসল কথা হইলো তুমি মোবাইল ফোনে বদ সিনেমা দেখবা, আমি থাকলে সমস্যা, তাই আমারে সরাইতেছ? কর গিয়া যা খুশি।'
একজায়গায় বেশিক্ষণ বসলে হাবিবের কোমর ধরে যায়। তাই উঠতে ইচ্ছা করছে না। সে আসলে অপেক্ষা করছে কামরুলের জন্য।
সকাল দশটার দিকে কামরুল বাসা থেকে বের হয়। ওই সময় ছাড়া তার সাথে কথা বলার সুযোগ নেই। সে ফেরে গভীর রাতে।
কামরুল গাড়িতে উঠতেই হাবিব এগিয়ে আসে। কোমরের ব্যথার জন্য তার চলাফেরা ধীর গতির।
'চাচা কিছু বলবেন? তাড়াতাড়ি বলেন। আমার মিটিং আছে।'
'বাবাজি, খুব ঠান্ডা পড়ছে , একটা নতুন কম্বল দরকার ছিলো।'
'এগুলা আমারে বলেন ক্যান? মারিয়ামকে বলতে পারেন না? আমি কম্বল কিনতে যাব কখন? আচ্ছা দেখি, কি করা যায়। '
এই কথা গত সপ্তাহেও কামরুল বলেছিল। মারিয়ামকেও বলা হয়েছে, তারা দুইজনই এক কথা বলে, 'আচ্ছা দেখি'। দেখার সময় তাদের কারোই নেই, দুইজনই মহা ব্যস্ত।
কামরুলের গাড়ি বের হয়ে গেল। হাবিব আবার গিয়ে মোড়ায় বসলো। তার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। ইদানিং অল্পতেই চোখে পানি আসে, বুকের মধ্যে চাপ অভিমান জমে থাকে। কেন এমন ভাবছে? ওরা দুজন যখন সময় পাবে নতুন কম্বলের ব্যবস্থা নিশ্চই করবে। অবশ্য এই বিশ্বাস খুব জোরালো মনে হয় না।
হাবিবের স্ত্রী সেলিনার একটা লাল রঙের কম্বল ছিলো। সেলিনার মৃত্যুর পর হাবিবের খেয়াল ছিল না ঘর সংসারের প্রতি। কে কখন এসে ঘরের সব জিনিসপত্র নিয়ে গেল, হাবিব টেরও পায়নি। অন্য অনেক জিনিসের সাথে কে যেন নিয়ে গেল সেই কম্বলটাও। তার ছেলে মালয়শিয়া থেকে পাঠিয়েছিল কম্বলটা।
সেই সময় হাবিব কাজ করত কামরুলের বাবার চালের আড়তে। স্ত্রী আর একমাত্র সন্তানকে নিয়েই হাবিবের জীবন। কামরুলের বাবা অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। হাবিব তার বিশস্ত কর্মচারী। কামরুলের বাবাই হাবিবের ছেলেকে মালয়শিয়া পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন। মা ছেলের সে কি কান্না যাওয়ার দিন! হাবিব কত বোঝালো, ছেলে ভালো থাকবে, ভালো আয় রোজগার করবে, তাতে সেলিনার মন ভরে না।
ছেলে চলে যাওয়ার পর থেকেই সেলিনার শরীর খারাপ করতে থাকে। দিনের মধ্যে কতবার যে ছেলের ঘরে গিয়ে ঘর গোছায় ! ছেলের চিঠি আসলে হাজার বার পড়ে আর কেঁদে বুক ভাসায়।
সেলিনার মৃত্যুর পর হাবিব কেমন যেন অসাড় হয়ে গেল। আড়তে যাওয়া বন্ধ করে দিল। মাসখানেক পর যখন বুঝতে পারলো, ঘরে একদানা চাল কেনার পয়সাও নেই, তখন আড়তে গিয়ে দেখে সেখানে নতুন কর্মচারী কাজ করছে। পৃথিবী কারো জন্য থেমে থাকেনা
তখন কামরুল বললো ঢাকায় সে নতুন বাড়ি করছে। হাবিব চাইলে সেখানে কেয়ার টেকার হিসাবে কাজ করতে পারে।
হাবিব ভাবলো, ভালই হবে, এখান থেকে দূরে যেতে পারবে। মনটাও হালকা হবে।
ঢাকায় এসে দেখে এলাহী কারবার! বিশাল এক বাড়ি হচ্ছে, কত লোক সেখানে কাজ করে! হাবিব অবশ্য অল্প দিনেই সব বুঝে নিল। ওই স্টাফ কোয়ার্টারটাই সবার আগে তৈরী হয়েছিল, সেখানেই হাবিব থাকত।
সেই সময় তারিকুল নামে এক ঠিকাদার বাড়ির কাজ করতো, বিরাট ধান্দাবাজ। একদিন হাবিবকে বলল সে কিছু সিমেন্টের বস্তা আর রড নিয়ে যাবে, কি নাকি কাজ আছে।
হাবিবের সন্দেহ আগেই ছিল, ব্যাটা মনে হয় রড সিমেন্ট সরায়। হাবিব বলল 'আমি এইখানে থাকা অবস্থায় স্যারের নির্দেশ ছাড়া একটা ইটও নিতে পারবা না। '
'আরে চাচা, আপনের কি? এগুলা আপনে কিনছেন? আমার আরেকটা সাইটে কিছু মাল লাগব, তাই নিতাছি। পরে এডজাস্ট কইরা দিমুনে। আর আমনে এইটা রাখেন। ' বলে হাবিবের হাতে একটা নোট গুজে দেয়। হাবিব নোট ফিরিয়ে দিয়ে সেদিনই তরিকুলের কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
তরিকুলের জায়গায় আরেকজন আসলো, হাবিব দিন রাত প্রতিটা জিনিসের উপর নজর রাখত - ইট , সিমেন্ট, সুরকী , রড। টালি খাতায় সব হিসাব রাখত। কামরুল সেসব কোনদিন দেখত না। তাও হাবিব পাই পাই হিসাব রাখত।
এই বাড়িটা যখন পুরোপুরি তৈরী হয়ে গেল, কামরুলের পরিবার এখানে চলে আসল, হাবিব তখনও এবাড়ির কেয়ার টেকারের কাজ করতো। গেট খুলে দেয়া, বাগানের কাজ তদারকি, বাড়ির কোনো কিছু নষ্ট হয়ে গেলে সেটা ঠিক করার ব্যবস্থা করা, এইসব কাজ। বাড়িটার প্রতি কেমন যেনো মায়া পড়ে গেছে, প্রতিটা ইট কাঠ তার চেনা।
সব কিছু ঠিক ছিলো , কিন্তু দুবছর আগে হটাৎ বাড়ির পেছনে কাজ করতে গিয়ে পিছলে পড়ে কোমরে এমন ব্যথা হলো, সে ব্যথা আর ছাড়ল না। তাছাড়া বয়সটাও কেমন জানি হুহু করে বেড়ে গেল। বাড়ির গেটে গাড়ি হর্ন দিলে এখন আর ছুটে গিয়ে গেট খুলতে পারে না। তার জায়গায় অল্প বয়সী একটা কেয়ার টেকার আসল।
হাবিব নিজের প্রতি অন্যদের অবহেলা বুঝতে পারে, এ বাড়িতে আসলে সে একজন বাড়তি মানুষ, একটা বোঝা। কিন্তু সে যাবেই না কোথায়? সেলিনার মৃত্যুর পর যখন সে ঢাকায় চলে আসল তার কিছুদিন পর ছেলেটা দেশে এসেছিল। তার টাকার প্রয়োজন। তার বসত বাড়ি বিক্রি করে টাকা দিয়েছে ছেলেকে। ঘর দিয়ে আর কি হবে? ছেলে সুখে থাকুক। হাবিব নিজের কথা ভাবেনি একবারও। এখন তার যাওয়ার আর জায়গা নেই। ছেলেকে এসব বলে কষ্ট দিয়ে কি লাভ, ছেলে জানে বাবা ঢাকায় চাকরি করে - সেই ভালো।

কামরুলের আজ খুবই ব্যস্ত দিন। দুইটা জরুরি মিটিং করে বিকেলে একটা স্কুল মাঠে শীতের কাপড় আর কম্বল বিতরণী অনুষ্ঠানে যেতে হবে। শিল্প প্রতিমন্ত্রী সেখানে বিশেষ অতিথি হবেন। কামরুল তার সেক্রেটারি আমজাদকে ফোনে করে।
'হ্যালো, মন্ত্রী সাহেবের লাঞ্চের সব ব্যবস্থা করছো ? উনার খাবার কিন্তু ওয়েস্টিন থেকে আনাইবা। অর্ডার দেয়া আছে তো?'
'স্যার , একটা খারাপ খবর আছে। প্রতিমন্ত্রী স্যার আসতে পারবে না। উনার দাঁতে ব্যথা। উনি আজকে রেস্ট নিতেছে।'
কামরুলের মাথায় রক্ত উঠে গেল। 'আরে, কও কি এইসব ? দুইঘন্টা পরে অনুষ্ঠান আর তুমি এখন কইতেছ এই কথা? বলদ কুনহানকার।'
কামরুল ফোন রেখে দিল। আমজাদ মনে মনে ভাবলো, 'তুই বলদ, তোর চোদ্দ গুষ্টি বলদ। '
অনুষ্ঠানে পৌছে কামরুল দেখল ভালই ভীড় জমেছে, শীতকাতর গরীব লোকজন বাচ্চা কাচ্চা পরিবার নিয়ে প্যান্ডেলের সামনে বসে আছে। তার পাশে সারি সারি চেয়ার আর সোফা বসানো, সেখানে তার পরিচিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের হোমড়া চোমরা লোকজন বসেছে। আমজাদ মাইকে চিৎকার করছে,' সবাই বসেন, সবাই বসেন, কেউ দাঁড়ায় থাকবেন না। আর যার যার টিকেট হাতে রাখেন। টিকেট হারাইলে কেউ কম্বল পাবেন না। '
কামরুল দেখল সবাই হাতে একটা টুকরা করে সাদা রিসিট। এটা ভালো বুদ্ধি করেছে আমজাদ। মোট একশো কম্বল আর একশো শীতের কাপড় দেয়া হচ্ছে কামরুলের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে, তার মানে মোট একশো টিকেট দেয়া হয়েছে। কিন্তু লোক সমাগম দেখে মনে হচ্ছে অনেক বেশি লোকজন!
'আমজাদ এত লোক আসছে কেন? এত লেপ কম্বলের তো ব্যবস্থা নাই। '
'স্যার, লোক না আসলে অনুষ্ঠান জমবে ক্যামনে? মিডিয়া আসতেছে। '
'কি মিডিয়ার লোকজন কই ? খালি একটা বুড়া লোক দেখি ক্যামেরা নিয়া ঘুরতেছে। একটা ছবিও তো তুলতে দেখলাম না। '
'স্যার সবাই আসবে, চিন্তা কইরেন না। '
'টিভির কোন চ্যানেল থেইকা না কে আসব বললা , সে কই ?'
আমজাদের ফোন বাজছে, ফোনে কথা বলে তার মুখ কালো হয়ে গেলো।
'স্যার , প্রতিমন্ত্রী আসবোনা দেখে ভোরের আলোর সাংবাদিক আসব না বললো।'
কামরুলের মেজাজ খারাপ হচ্ছে, আজকের দিনটা কুফা দিন মনে হচ্ছে। আজকে এই অনুষ্ঠানের কারণ মিডিয়া এটেনশন পাওয়া, সামনে একটা ব্যবসায়িক সংঘঠনের নির্বাচনে সে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করবে। এই সময় মিডিয়া এটেনশন জরুরি।
'আমজাদ শোনো , তোমার মত গর্ধবের বাচ্চারে দিয়া কোনো কাজ হবে না। সাংবাদিক না করলো কেন? কত ট্যাকা লাগবো জিজ্ঞাস করছো ?'
'স্যার বিশ হাজার ট্যাকা চাইতেছে।' কথাটা পুরা সত্য না, সাংবাদিকের সাথে দশ হাজারে ডিল হয়েছে। বাকিটা আমজাদের কমিশন।
'তো দেও বিশ হাজার ট্যাকা। আর টিভি চ্যানেলের ব্যাটার কি খবর? তারে কত দেয়া লাগবে?'
'স্যার সেইটা ফিট করা আছে, সে টাইম মত আসবে চিন্তা কইরেন না। '
'নাহ, তোমার মত বলদ থাকলে চিন্তা কি? মন্ত্রী আসার কথা, আসলো না, কি ব্যবস্থা করলা?'
'স্যার, শিল্প প্রতিমন্ত্রী আসে নাই , কিন্তু আমি বানিজ্য উপদেষ্ঠা কালাম স্যারকে অনেক রিকোয়েস্ট কইরা আসতে রাজি করায়ছি। আপনি চিন্তা করবেন না। '
কামরুল শান্ত হলো, যাক, আমের বদলে আমসত্ব চালাতে হবে।
লেপ কম্বলের অপেক্ষায় বসে থাকা লোকজন হইচই শুরু করেছে। তারা চার ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছে। অনেকেই চিক্ত্কার করে জানতে চাচ্ছে কখন কম্বল দেয়া হবে। আমজাদ আবার হ্যান্ড মাইকে চিৎকার শুরু করলো ,'সবাই বসেন, সবাই ধৈর্য ধরেন....'
সবাই ধৈর্য ধরলো। প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, বিশিষ্ট অতিথি বৃন্দ, কামরুল- সবাই একে একে জ্বালাময়ী ভাষণ দিল। ভোরের আলোর সাংবাদিক পটপট ছবি তুললো , টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক ভিডিও করলো। সব শেষে একে একে শীতবস্ত্র আর কম্বল বিতরণ শুরু হলো। ততক্ষণে রুগ্ন ক্লান্ত ছোট ছোট শিশুরা নেতিয়ে পড়েছে, লাঠি হাতে থুরথুরে বুড়ির কোমর ব্যথা হয়ে গেছে, জওয়ান ছেলেগুলা যারা এতক্ষণ চিৎকার করছিল তাদের গলা বসে গেছে।
বিশেষ অতিথি, প্রধান অতিথি, মাননীয় অতিথি আর শেষে কামরুল কম্বল আর শীতের কাপড় গরিব লোকদের হাতে তুলে দিল। এই দেয়া নেয়ার পর্বের প্রমান স্বরূপ প্রচুর ছবি-ভিডিও করা হলো। আগামীকাল সেটা পেপারে আসবে, টিভিতে দেখাবে।
ছবি তোলা শেষে কামরুল আমজাদের হাতে দায়িত্ব দিয়ে বেড়িয়ে পড়ল। সবাই বিদায় নিচ্ছে, সবার সাথে কুশল বিনিময় করা দরকার। নির্বাচনের আগে লিয়াজো অত্যন্ত জরুরি।
সবাই চলে যাওয়ার পর আমজাদ অনুষ্ঠান শেষ করে দিল। অর্ধেকের মত কাপড় আর কম্বল ভ্যানে করে সরিয়ে নেয়া হবে, আগেই ব্যবস্থা করা আছে। এগুলো ইসলামপুরে বিক্রি হবে , ভ্যান সরাসরি ওখানেই যাবে।
এখনো অর্ধেকের বেশি লোক টিকেট হাতে দাঁড়িয়ে আছে। আমজাদ ভিড়ের দিকে তাকিয়ে ভাবে, আরো কত কম্বল দেয়ার অনুষ্ঠানে যে এইগুলা যাবে, এই পর্যন্ত কত জায়গা থেকে কম্বল নিয়েছে কে জানে। কম্বল নিয়ে এরা দোকানে বিক্রি করে দেয়, সব খবর জানে আমজাদ। শয়তান একেকটা!
'সবাই শুনেন, কম্বল দেয়া শেষ। যারা বাকি আছেন চলে যান। ' আমজাদ মাইকে বলে।
ভিড়ের মধ্যে একটা হইচই শুরু হয় ,তাতে অবশ্য কারো কিছু আসে যায় না, যদিও লোকগুলা ছয়ঘন্টা ধরে বসে আছে। বেশ কিছু সিকিউরিটি গার্ড লাঠি নিয়ে লোকগুলোকে তাড়িয়ে দেয়। গালাগালি হাতাহাতিতে পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠে। আমজাদ তাতে বিচলিত হয় না।
কামরুল রাত বারোটার দিকে বাসায় ফেরে। সন্ধায় সে ক্লাবে গিয়েছিলো। তার এক বন্ধু ইতালি থেকে রেড ওয়াইন নিয়ে এসেছে, জিনিষটা ভালো। হালকা নেশা হয়েছে কিন্তু নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারায়নি।
গাড়ি থেকে নেমে দেখে হাবিব দরকার পাশে মোড়ায় বসে আছে।
'আরে চাচা, আপনি এখনো ঘুমান নাই? এইসময় তো আপনে কোনদিন এইখানে থাকেন না। '
'কাদের আমার ঘর পাল্টায় দিছে। আমি থাকলে ঘরে ফ্যান ছাড়তে পারে না। কিন্তু নতুন ঘরটায় কেমন জানি গন্ধ, ইন্দুরও আছে। ঘুমাইতে পারি নাই, তাই এইখানে বইসা আছি। '
'ও, আচ্ছা, কালকে ঘর ঠিক কইরা নিয়েন।' কামরুল দরজা খুলে ঘরে ঢুকতে যায়।
'বাবাজি , তোমারে বেশ কইদিন কম্বলের কথা বলছি, জব্বর ঠান্ডা পরছে। একটা কম্বল দরকার ছিল। '
'ও হ্যা হ্যা, আচ্ছা দেখি, দিবোনে। আপনের এত ঠান্ডা লাগে ক্যান চাচা? ঢাকায় কোনো ঠান্ডাই তো নাই। তাও আপনি কম্বল কম্বল কইরা অস্থির, আচ্ছা দেখি কি করা যায়। '
হাবিব চুপ করে আবার মোড়ায় গিয়ে বসে। সমস্যা মনে হয় তারই, কেন যে তার এত ঠান্ডা লাগে
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রাজু অভিনন্দন রইলো।
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬
মোজাম্মেল কবির অভিনন্দন... পরের লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
ভালো লাগেনি ২৪ জানুয়ারী, ২০১৬
Fahmida Bari Bipu অভিনন্দন তানিয়া.মাত্র কিছু ঘন্টার এই প্রাপ্তি! এজন্যেই তো জিনিয়াস bolechhilam. অনেক অনেক Shuvechha. :-)
ভালো লাগেনি ২২ জানুয়ারী, ২০১৬
পুরস্কার পাবো একেবারেই আশা করিনি। অনেক ধন্যবাদ। আমি খুবই সাধারণ মানুষ, জিনিয়াস না মোটেই।
ভালো লাগেনি ২৩ জানুয়ারী, ২০১৬
এশরার লতিফ অনেক অভিনন্দন.
ভালো লাগেনি ২১ জানুয়ারী, ২০১৬
অনেক ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ২৩ জানুয়ারী, ২০১৬
ইমরানুল হক বেলাল এটা একটি অন্যতম গল্প
ভালো লাগেনি ২১ জানুয়ারী, ২০১৬
অনেক ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ২৩ জানুয়ারী, ২০১৬
কেতন শেখ সুন্দর গল্প
ভালো লাগেনি ৪ জানুয়ারী, ২০১৬
অনেক ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৭ জানুয়ারী, ২০১৬
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন ।...ও হ্যা হ্যা, আচ্ছা দেখি, দিবোনে...। ভাল লিখেছেন। শুভেচ্ছা রইল।
ভালো লাগেনি ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৫
অনেক ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫
রুহুল আমীন রাজু এক কথায় ভালো লাগলো .....শুভেচ্ছা রইলো .
ভালো লাগেনি ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫
অনেক ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫
ধ্রুব সত্য খুব সুন্দর লিখেছেন । ভোট ও শুভেচ্ছা রইল ।
ভালো লাগেনি ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫
অনেক ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫
রুহুল আমীন ভাল লিখেছেন তবে;আরও ভাল লিখবেন নিশ্চয়৤ ভোট রেখে গেলাম৤ অমার পেজে আমন্ত্রণ৤
ভালো লাগেনি ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫
আরো ভালো লেখার চেষ্টা চলবে। আপনাকে ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫

২২ জানুয়ারী - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ২৫ টি

সমন্বিত স্কোর

৪.৯

বিচারক স্কোরঃ ৩.২৭ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ১.৬৩ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪