সাজনা পাতার ভর্তা

জাহাঙ্গীর অরুণ
২৬ জুলাই,২০১৩
গত কয়দিন ধরেই সাজনা পাতার ভর্তা খেতে খুব ইচ্ছা করছে। ডাল ভাত সাথে সাজনা পাতার ভর্তা। আপাকে ফোন দিলাম, সাজনা পাতার ভর্তা কিভাবে করতে হয় বল্। আপা বল্লো, সহজ। প্রথমে সাজনা পাতা খোলায় টালতে হবে। শুকনা মরিচ, রসুন আর লবন একসাথে পাটায় বাটতে হবে। এবার এই বাটায় টালা সাজনা পাতা দিয়ে সামান্য করে বাটা দিলেই হয়ে যাবে সাজনা পাতার ভর্তা।

রাতে সাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হই। উত্তরায় কাঁচা বাজার দেখলে সাইকেল থামিয়ে সাজনা পতার খোঁজ করি, পাই না। ১১ নং সেক্টরের কাঁচা বাজারের একজন মহিলা সজ্বি নিয়ে বসে থাকেন। জিজ্ঞাসা করলাম, খালা সাজনা পাতা আছে? তিনি হয়ত ভেবে পেলেন না আমি সাজনা পাতা কিভাবে চিনি। খুব মজা নিয়ে ফিক করে হাসি দিলেন। আন্তরিকতার সাথে জিজ্ঞাসা করলেন, খালু সাজনা পাতা দিয়া কি করবাইন? আমি বল্লাম, ভর্তার জন্য। সাজনা পাতা তার কাছে নাই। কিন্তু বল্লেন, খোঁজ করে এনে দিবেন।

সাজনা পাতার কথা আমি ভুলে যাই। সাইকেল নিয়ে যেদিন ঐ দিকটায় যাই সেদিন জিজ্ঞাসা করি, খালা খুব সুন্দর হাসি দিয়ে বলেন, খালু চেষ্টায় আছি। গত দিন জানালেন, একটা গাছ পেয়েছেন, আজ সকালে যেন যাই। সকালে গেলাম ভুলে। সন্ধার পর ঘুরতে বের হলাম। হঠাৎ করে সাজনা পাতার কথা মনে হলো। সব্জি দোকানে গিয়ে দেখি ৮/১০ বছরের একটা মেয়ে। সাজনা পাতার খোঁজ করতেই মনটা কালো করে বল্লো, এতকনে আইছুইন? সাজনা পাতা নাকি ঝরে যায় দ্রুত। সকাল থেকে অনেকে নিতে চেয়েছে বিক্রি করেনি। কিন্তু মাত্র দশ মিনিট আগে পাতাগুলো ফেলে দিয়েছে। সহজ সরল মেয়ে, এই ক্ষুদ্র একটা কারনে সে সত্যিই মর্মহত। আমি গেলাম কিন্তু পাতাটা তারা দিতে পালো না।

আমার মধ্যে কেমন জানি একটা অপরাধবোধ কাজ করলো। মনে করে পাতাটা এনে না বিক্রি করে রেখে দিয়েছে। অথচ তার এই মমত্ববোধকে আমি গুরুত্ব দেইনি! সাজনা পাতার দাম কত হবে তা আমার ধারণার বাইরে ছিলো। জগৎ সংসারের বেসিক কিছু জ্ঞান আমার কম। জীবনের এতটা বছর এই কম জ্ঞান নিয়ে চলে তো এসেছি! যাই হোক, মেয়েটাকে জিজ্ঞাসা করলাম, কত টাকার পাতা ছিলো রে মা? মেয়েটা বল্লো, দশ টাকার। ভাবলাম মাল না নিয়ে টাকাটা তাকে দিলে কি সে নিবে? পরক্ষনেই মনে হলো, এতকিছু বুঝার বয়স ওর হয়নি। অতএব মনের ভার মুক্ত করার মুক্ষম সুযোগ। দশটা টাকা বাড়িয়ে দিয়ে বল্লাম, আমি খুব দুঃখিত। সকালে আসার কথা ছিলো আমার। দামটা রাখো। মেয়েটা টাকাটা রাখলো। জিজ্ঞাসা করলো, আবার আনবে কি না। আমি হাসি দিয়ে বল্লাম, নাহ রে মা থাক্।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রোদের ছায়া আপনি সাজনা পাতার অভাবে ভর্তা খেতে পারলেন না জেনে খুব খারাপ লাগছে । আমার আশেপাশে অনেক সাজনা গাছ । সাজনা পাতার ভর্তার এই রেসিপি জানা ছিল না, একদিন আমিও খেয়ে দেখবো কেমন লাগে । তবে আমি কিন্তু অন্য ভাবে এর ভর্তা বানাই ।।
জাহাঙ্গীর অরুণ Onno bhabe shudhur bhorta banalei hobe? Aamra ki bhai na? bhai der chhara bhorta khawa thik?

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

মার্চ ২০২৪ সংখ্যার বিজয়ী কবি ও লেখকদের অভিনন্দন!i