বাঙলা প্রতিষ্ঠায় কি আরেকটি যুদ্ধের প্রয়োজন ? ( প্রথম পর্ব )

বিন আরফান.
০৯ এপ্রিল,২০১২



যে ভাষায় আমরা কথা বলি তা আমাদের পরিবেশ থেকে শৈশবেই শিখে থাকি। বিধায় এই ভাষার মর্ম আমাদের হৃদয়ে দোল খায়না। চলার জন্য বলতে হয়, তাই বলি। ভালবেসে নয়। সেভাবে অনুধাবনও করতে পারিনা যেভাবে রাষ্ট্রভাষা বাঙলা অর্জনে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন ভাষাবীরগণ। বাংলাদেশে জন্মেছি, বসবাস করছি এবং বাঙলা বলতে পারি বলেই নিজেদের বাঙালি দাবি করছি। অথচ বাঙলার মাথায় কাঠাল রেখে কোষ খাচ্ছে বিদেশী ভাষা। আর তাদের মুখে আঠা যেন না লাগে সে জন্য আমরা তেলের জোগান দিচ্ছি।

এর সূচনাও হয় বায়ান্ন  হতে। বাঙলা প্রতিষ্ঠা করতে উর্দূকে গা থেকে সরিয়ে দেই। যদিও উর্দূ আমাদের কথ্য ভাষা ছিলনা। পাক বাহিনীর পৈশাচিক বাধ্য বাধকতা উপেক্ষা করে আমরা অর্জন করি বাঙলা বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে। সেই অর্জনটা ছিল আটই ফাল্গুন। সেদিন গা থেকে উর্দূ সরিয়েছি ঠিকই তবে মাথায় চেপে বসে একুশ। যা কথ্য ভাষায় পরিণত হয়।

রাজপথে, বিভিন্ন মঞ্চে সেদিন হতে আজও আওয়াজ শুনা যায় গর্জন সহকারে “ফাগুনের অর্জন দেবনা বিসর্জন”। ফাগুন কি আমরা অর্জন করতে পেরেছিলাম ? নাকি একুশ ? অপকৌশলে ভিনদেশী আরেকটি ভাষা আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়। হতে পারে ভাষাবীরগণ এ নিয়ে ভাবেননি নতুবা তাঁরা বুঝতে সক্ষম ছিলেননা।

সময়ের সাথে সেই ধারাবাহিকতা তাল মিলিয়ে ভিনদেশী ভাষা আমাদের প্রতিটি কার্যকলাপে শক্ত অবস্থান তৈরী করে নিয়েছে। রাষ্ট্রীয় ভাবে সর্বস্তরে বাঙলা প্রয়োগের বিভিন্ন লোক দেখানো উদ্যোগের সুর শুনা গেলেও সরকারী ভাবে আজও বাঙলা মাসের এক তারিখে বেতন ভাতা দেয়ার ব্যবস্থাটা করা হচ্ছেনা। সংবিধানটাও আজও বাঙলা হলোনা। তাহলে কি রাষ্ট্রীয় ভাবে বাঙলা প্রতিষ্ঠায় আরো একবার লড়তে হবে ? লড়তে আমি সর্বদাই প্রস্তুত। এই জন্যই প্রস্তুত যে, লজ্জায় আমার মাথা নত হয়ে থাকে যখন ইংরেজী মাসের এক তারিখে বেতন নেয়ার অপেক্ষায় থাকি। কেন ? আমি ইংরেজ নাকি ? আমিতো খাঁটি বাঙালি। আর আমার লজ্জায় পড়ার কারণকি আমি ? সাধারণ জনগণ ? নাকি সরকার ? সরকার যা করতে চাচ্ছে তাই করতে পারছে। তবে এ ক্ষেত্রে ইচ্ছে করছেননা কেন ? এতা একটি আদেশ জারির বেপার মাত্র।

কেন যেন বারবার রবীন্দ্রনাথের কবিতার দুই লাইন মনে পড়ে –
“এ দুর্ভাগ্য দেশ হতে, হে মঙ্গলময়,
দূর করে দাও তুমি সব তুচ্ছ ভয়।”

সর্বোপরি, সর্বক্ষেত্রে বাঙলা প্রতিষ্ঠায় সরকারের উপর ভরসা করে বসে াকলে ফলপ্রসূ কিছু হবেনা। সর্বসাধারণকে যে যার অবস্থান হতে বাঙলা প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক প্রচেষ্ঠা চালাতে হবে। জানিনা রবীন্দ্রনাথ কোন কোন উপলব্ধি হতে নিম্ন লাইন দু’টি লিখেছিলেন। যার মধ্রে আমি সরকার ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অদৃশ্য মিল পাই। -
“ভূতের মতন চেহারা যেমন নির্বোধ অতি ঘোর।
যা কিছু হারায় গিন্নি বলেন কেষ্টা বেটাই চোর।”

(চলবে)

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

মার্চ ২০২৪ সংখ্যার বিজয়ী কবি ও লেখকদের অভিনন্দন!i