চিরুনি

Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon)
২৮ ফেব্রুয়ারী,২০১২

 

অনেকদিন তো হয়ে গেল। সেই ২০০৫ এর কথা। তখন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম। ভার্সিটিতে ক্লাস বন্ধ ছিল। তৃতীয় বর্ষে পড়ি তখন। এক বিকেল বেলা পরীক্ষার রুটিন দেখতে গেলাম ভার্সিটিতে। তখন বিলে গড়িয়ে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছিলো। করিডোর ধরে এগিয়ে যাচ্ছি বের হয়ে যাব বলে। তখ নজরে এলো ছোট্ট একটা ছেলের উপরে। এক লোকের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। গায়ে স্কুলের পোশাক। পিঠে ঝোলানো একটা ব্যাগ। অপূর্ব বাচ্চাটার মুখশ্রী। অবাক হয়ে লক্ষ করলাম বাচ্চাটার হাতে একটা চিরুনি ধরা। সন্ধ্যাবেলা স্কুল পড়ুয়া বাচ্চাটার হাতে একটা চিরুনি এলো কথা থেকে ভেবে কূল কিনারা করতে পারলাম না। যাই হোক, বলে নেয়া ভাল, আমার নিজের ছোটবেলা থেকেই ছোট বাচ্চাদের সাথে অনেক ভাব। বড়দের চাইতেও ছোটদের সঙ্গ আমার অনেক ভাল লাগে। এখন এতো বড় হয়ে হাতি ঘোড়া হবার স্বপ্ন দেখি, কিন্তু মনের ভেতরে শিশুদের জন্য ভালবাসা রয়েই গেছে। কেন জানি আমার মনে হয়, বাচ্চাদের নিষ্পাপ স্পর্শে আমার নিজের পাপ কিছু হলেও মনে হয় ধুয়ে মুছে যায়। আমি এখনও ওদের সাথে খেলতে পছন্দ করি। সবাই হাসে; বলে, এতো বড় হয়ে গেছে কিন্তু এখনও কেমন ছেলেমানুষ রয়ে গেছে। ওতে আমার কিছু অবশ্য যায় আসে না। যাই হোক এবার মূল কথায় ফেরত আসি। সুযোগ পেলেই আমি মূল কথা বাদ দিয়ে অন্য প্যাচাল পাড়া শুরু করে দেই।

বাচ্চাটার হাতে চিরুনি দেখে অবাক হলাম। আমার মুখোমুখি যখন এলো, তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, বাবু তুমি চিরুনি দিয়ে কি কর? বাচ্চাটা আমাকে অবাক করে দিয়ে জানালো, ‘তুমি আমার কাছে আস, আমি তোমার চুল আঁচড়ে দেই’। কত বয়স হবে ছেলেটার? মাত্র ৪ কি ৫ হবে। আমি অবাক হয়ে গেলাম ওর কথা শুনে। হেসে ওর সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসে গেলাম। বাচ্চাটা ওর শিশুসুলভ হাতে আমার চুল চিরুনি দিয়ে আঁচড়াতে লাগলো।

মনে পড়ে গেল নিজের শৈশবের কথা। যখন স্কুলে যাবার আগে আমার মা আমাকে এইভাবে চুল আঁচড়ে দিত। বাম দিক থেকে ডান দিকে একটা সিঁথি করে দিত। বাচ্চাটা কিছুক্ষণ আমার চুলে আগোছালো করে নাড়াচাড়া করে বলে, নাও তোমার চুল আঁচড়ানো শেষ। আমি মুগ্ধ চোখে বাচ্চাটার কান্ড দেখছিলাম। নিষ্পাপ হাতের ছোঁয়া নিলাম আমার মাথায় আশীর্বাদের মত করে। ছোখ ছল ছল করে উঠলো কেন নিজেই জানি না। বাচ্চাটা লোকটার সাথে চলে গেল করিডোর ধরে। আমি বাচ্চাটার নাম জিজ্ঞাসাও করতে ভুলে গেলাম। বাচ্চাটার নাম মনে নেই, কিন্তু তার স্মৃতি এখনো মনে তাজা হয়ে আছে। অনেক  দিন পর্যন্ত দিনটাও মনে ছিল। সেপ্টেম্বর মাসের কোন এক তারিখ। এখন তারিখটাও আর মনে করতে পারছি না। খুব সহজেই আমরা ভুলে যাই সবকিছু।

 

Walking through corridor
I saw a little boy-
Talking with a man
With full of joy.
White shirt, blue pant
And a shoe pair,
Standing on the ground
Not far from the stair.
The boy had a comb
To part the hair,
Using to that man
Who was there.
Suddenly the boy
Looked at me coming-
I asked him smiling,
"What are you doing?"
The boy said,
"I will part you hair,
Don't stand far away
Come to me here!"
I went to the boy
Bend my head down,
To get his love
That he had shown.
What the boy did,
Symbol of his love-
Which is very rare
In this world of shove.
I thanked the boy
And get back to the job,
Where I get, a lot
Scuttle full of sob.

 

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রনীল N/A UNION ALL SELECT NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL# শৈশবের মত সুন্দর, বিশুদ্ধ আর কিছু কি আছে?
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) হা আর কিছু নেই
ভালো লাগেনি ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
মোঃ আক্তারুজ্জামান এইত গেল মাসে- টঙ্গী থেকে বাসে চেপে বসেছি মালিবাগ যাব| বাড্ডা থেকে হুড়মুর করে একটা লোক বাসে উঠে গেল| তার শরীর ময়লা লেগে আমার হাটুর কাছে প্যান্টের কিছুটা জায়গা লালচে হয়ে গেল| আমি হই চৈ করে উঠলাম| লোকটা ড্রাইভারের পিছনের সীটে আমার দিকে মুখ করে মাথা নিচু করে বসলো| আমি এবার খেয়াল করে দেখলাম- মানুষটা আসলে বছর বারো তের বয়সের একটা ছেলে| খুব ভালো করে খেয়াল করে বুঝলাম ছেলেটা সারাদিন ইট ভেঙ্গে ঘরে ফিরছে| ভাঙ্গা ইটের লাল ধুলি কনায় ওর আপাদমস্তক লাল হয়ে গেছে| যেন যুদ্ধ ফেরত মানুষ মায়ের কাছে ফিরছে| এবার আমার ভিতরে অন্য রকম ঝর বইতে লাগলো- ওকে ধমক দেয়ার অপরাধে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হতে লাগলো| মনে হলো ওর পা চেপে ধরে মাফ চাই| কিন্তু লোক লজ্জার ভয়ে পারলাম না- আসলে আমি বোধহয় খুব সংকীর্ণ মনের মানুষ| নিজের কাছে নিজে অপরাধী হয়ে রইলাম.......
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) কি সুন্দর করেই না বললেন ভাই! বাহ! অনেক ভালো লাগলো আপনার এই মন্তব্য!
ভালো লাগেনি ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
Lutful Bari Panna শাওন তোমাকেও আমার একটা বড়সড় বাচ্চা বলে মনে হয়... হা হা হা। আমার নিজেরও বাচ্চাদের সাথে খুব ভাব। আমার এক কাজিনের ছেলে যখন জন্মালো তখন থেকেই সে আমার কোলে কোলে বড় হয়েছে। ওর বাবা তখন ইউকেতে। ওর বয়স যখন দুইএর কাছাকাছি তখন ওর বাবা একেবারেই চলে আসে। সেদিন ওরা বেড়াতে এসেছে। ছেলেটাকে দেখার জন্য ভীষণ রকম একটা টান ফিল করছিলাম। সে কিন্তু আমাকে চিনতে পারলনা স্বভাবতই। কিন্তু জিজ্ঞেস করলাম তোমার বয়স কত? বলল দুই বতছর। ওকে কোলে তুলে নিয়ে মনে হছ্ছিল আমার অনেক দিনের ফাকা বুকটা ভরে গেছে।
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) আপনার মন্তব্য পরেও আমার মনটা ভরে গেছে,.মনে হচ্ছে আমার লেখাটা সার্থক হয়েছে. খুব ভালো লাগে যখন প্রিয় মানুষগুলা মন্তব্য করে. আপনি ঠিক বলেছেন পান্না ভাই! আমাকে সবাই বলে, আমি নাকি এখনো বাচ্চাদের মত আচরণ করি!
ভালো লাগেনি ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
Lutful Bari Panna সেই থেকে ওরা ঢাকায় থাকে। ওর বয়স এখন চার। চলে যাবার পরে ভীষণ মন খারাপ হয়ে গেল।
ভালো লাগেনি ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) আহারে :-(
ভালো লাগেনি ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
সাইফুল করীম চিরুনি নিয়ে কথা ঊঠলেই মনে হয়- রাংগা মাথায় চিরুনি আর বর আসবে এখুনি/ বেশ লাগল আপনারটাও-সাবলীল লেখনী......
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) এইটা নিজেই দেখি একটা দারুন ছড়া হয়ে গেসে রে ভাই! :-D অনেক অনেক ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
এফ, আই , জুয়েল # উথাল-পাথাল মনে ভাবনা গুলো দোলা দিয়ে তোলে কত সুর / অতীত স্মৃতি গায় যে গীতি পেখম মেলে মন ময়ুর ।।=== অনেক সুন্দর স্মৃতির বাহার ।।
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) তার চাইতেও বেশি ভালো লাগলো আপনার এই ছান্দিক মন্তব্য! অনেক অনেক ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

মার্চ ২০২৪ সংখ্যার বিজয়ী কবি ও লেখকদের অভিনন্দন!i