২৯ মার্চ,২০১২


জগৎ সংসারের মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন- গল্পকবিতার সৌখিন শব্দ শিকারী আহমাদ মুকুল ভাইয়ের গর্ভধারিণী মা। খবরটা জানার সাথে সাথেই মুকুল ভাইয়ের মোবাইল ফোনে রিং দেই। ফোন রিসিভ করে উনি শিশুর মত কাঁদছিলেন, আমি সান্তনা দেয়ার কথা ভুলে যাই। হয়ে যাই অনেকটাই বাকহীন, আবেগ আপ্লুত। কিছু বলতে পারিনি আমি। আসলে এ শোকের সান্তনা দেয়া যায় না। এ রকম শোকের ঘটনায় সান্তনা বানী হিসেবে যথার্থ কোন শব্দ বা শব্দাবলী আছে বলে আমার বিশ্বাসও হয় না।

গতকাল সকালে ছুটে যাই জানাযার নামাজে শরীক হওয়ার জন্য। মুকুল ভাইকে দেখে চমকে উঠি। বিধ্বস্ত এলোমেলো অন্য রকম। 

বার্ধক্য অভিশাপ- বলে একটা কথা আছে। অন্তিম সময়ে শরীর কার্যক্ষমতা হারায়। কেউ বিশ্রী শব্দে কাঁশেন, কেউ বা জামাকাপড় বাড়ী ঘর নষ্ট করেন। যান্ত্রিক সভ্যতার টিপটপ ফিটফাট যুগে সবাই পরিপাটি থাকতে চায়। অনেকেরই এই সব অচল মানুষগুলিকে ঘরে রাখতেও লজ্জা হয় আবার লোক লাজের ভয়ে ফেলে দিতে গেলেও লজ্জা পেতে হয়। অনেকেই ভুলে যান নিজের জীবনের কাছে বাবা মায়ের ত্যাগ তিতিক্ষার কষ্ট গাঁথা। বুড়ো বাবা মা অনেকের কাছে অনেক সময় হয়ে উঠেন- বোঝা, জঞ্জাল।

জানাযার নামাজের পর মুকুল ভাই বলছিলেন ২৫/৩০ বছর আগের কথা। ছয় ভাই বোনের সংসারে উনি তখন স্কুলের নবম শ্রেণীতে পড়েন। তখন একদিন বাবা অসময়েই চলে গেলেন।

এই মা-ই তখন হয়ে উঠেছিলেন সংসারের মা, বাবা সব। খুব ভাল করেই অনুভব করতে পারি ২৫/৩০ বছর সময়টা এই মা একটা যুদ্ধকালীণ সময় পার করেছেন। আমিও ছোট বেলা বাবাকে হারিয়েছি আমার মাকে জীবনের সাথে লড়তে দেখেছি।

মুকুল ভাইয়ের মা যুদ্ধ জয় করেছেন। উনি ছেলেমেয়েদেরকে বড় করছেন, মানুষ করেছেন, প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এই প্রতিষ্ঠিত একজন মুকুল ভাইকে আমরা দীর্ঘ দিন থেকে দেখেছি একজন সফল মানুষ হিসেবে, শক্তিমান লেখক হিসেবে, অসম্ভব রকমের সফল সংগঠক হিসেবে।

গত দুদিন ধরে আমি আহমাদ মুকুলকে নতুন করে দেখেছি, জেনেছি একজন শিশু হিসেবে। মায়ের জন্য কাতর, উদ্ভ্রান্ত এক শিশু মুকুল! শোকের আবহে থেকেও মুকুল ভাইয়ের মাতৃপ্রেম, মাতৃভক্তি দেখে মুগ্ধতায় আমার মন ভরে উঠেছে।

মা, স্রষ্টার অবধারিত নিয়মে সাড়া দিয়ে তুমি চলে গেছ লোকান্তরে। তুমি তোমার কর্ম, ভালবাসা, দায়িত্ব দিয়ে সব কিছু জয় করে গেছ। তোমার সন্তানদের হৃদয় জুড়ে তুমি অম্লান, অক্ষয়! তুমি বিজয়ীনির মুকুট সুশোভিত হয়ে ইহকাল পরকালে তোমার সন্তানদের হৃদয় সাম্রাজ্যে বিচরণ করবে!

 

[আমার এই শব্দমালা প্রিয় ভাই বন্ধু আহামাদ মুকুল ভাইয়ের মায়ের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে উৎসর্গ করলাম।]   

  

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
কামরুল হাছান মাসুক মা শব্দটা যে কি অবাক না হয়ে পারা যায় না। মায়ের মত অাপন এই পৃথিবীতে কেহ নেই। মা যে মাই তা মুকুল ভাইয়ের অাম্মার কথা শুনে অাবার ো মনে হল। অাপনি অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন।
মোঃ আক্তারুজ্জামান মাসুক সাহেব কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানবেন|
খোন্দকার শাহিদুল হক মুকুল ভাইয়ের মায়ের জন্য শ্রদ্ধা নিবেদন করছি আর মহান আল্লাহপাকের দরবারে মাগফেরাত কামনা করছি। মুকুল ভাইকে বলার কিছুই নেই। মা হারানোর কষ্টটা যে কোন কষ্টে চেয়ে বেশ শক্ত। মোঃআক্তারুজ্জামান ভাইকে এই বিষয়ে পোস্ট দেয়ার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ভাই, মুকুল ভাইকে আমার সালামটা পৌছে দিলে বাধিত হবো। আপানর জন্য শুভেচ্ছা রইল।
মোঃ আক্তারুজ্জামান অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই জ্বি, মুকুল ভাইকে অবশ্যই আপনার সালাম পৌছে দিব|
Lutful Bari Panna কটা দিন খুব ব্যস্তায় কাটল। মোবাইল স্ক্রীনে লেখাটা দেখেছি- পড়তে পারিনি। মানুষকে চলে যেতেই হয়, চলে যেতেই হবে। ওটাই যে আমাদের আসল ঠিকানা, গন্তব্য। বরং কামনা করি তিনি সেখানে ভাল থাকুন।
আহমাদ মুকুল কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই। শিরোনাম এরকম হতে পারে আমার কল্পণাতেই আসে নি। সত্যিই তো, তিনি প্রকৃতই বিজয়ীনি মা। সময়ের পেষনে শুকিয়ে আসা নয়নে নতুন করে অশ্রুর সঞ্চালন করলেন আক্তার ভাই। তবে এটি যতটা নয় শোকের, তারচেয়ে বেশী আনন্দের!
মোঃ আক্তারুজ্জামান তবে এটি যতটা নয় শোকের, তারচেয়ে বেশী আনন্দের- যথার্থ বলেছেন ভাই| অনেক অনেক ধন্যবাদ|
মামুন ম. আজিজ পরিচিত কারও নিকটজনের মৃত্যু খবর পেলে আমি ফোন করতে ভয় পাই। কারন আমার কাছে সমবেদনার ভাষা নেই। ......একমাত্র আক্তার ভাইকেই দিয়ে সম্ভব এমন সুন্দর কনডোলেন্স লিখা। ছলছল করা চোখ কার না রবে , এই লেখাটি পাঠে সবার তেমনই হবে।
মোঃ আক্তারুজ্জামান মামুন ভাই সবসময় অনেক অনেক ভালো থাকুন- এই কামনা করি|
আহমেদ সাবের পোষ্টটা দেবার জন্য ধন্যবাদ আক্তারুজ্জামান ভাই। পৃথিবীতে সন্তানের কাছে মায়ের চেয়ে বড় কেউ আর নেই। মুকুল ভাই'এর মত সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন সন্তানের মা তিনি। দূর থেকে দোয়া করি, আল্লাহ যেন মাকে জান্নাতবাসিনী করেন এবং তার পরিবারবর্গকে শোক সহ্য করার ক্ষমতা দান করেন।
মোঃ আক্তারুজ্জামান লেখাটি পড়ার জন্য সাবের ভাই আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ| আপনার উপরও আল্লা তা আলার অশেষ মেহেরবানী বর্ষিত হোক|
সাঈদ সন্ধ্যায় সূর্য ভাই এর মারফত খবর টা পেলাম। শুনতেই চোখ ভিজে উঠল। নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। মুকুল ভাইকে ফোন দিব দিব করেও দেইনি। দিয়ে কী বলব এই ভেবে... আল্লাহ মুকুল ভাইকে ধৈর্য ধারনের তওফিক দান করুন। মা'কে বেহেশত নসীব করুন। আমীন।
সাঈদ অনেক ইচছা থাকা সত্তেও যেতে পারি নাই ...:(
মোঃ আক্তারুজ্জামান ধন্যবাদ, সুমন ভাই|
পন্ডিত মাহী মায়ের থেকে প্রিয় আর কেউ নেই ...
বশির আহমেদ আমার মাকে হারিয়েছি সেই ৮৮ সালে আজও মনে হলে গুমরে গুমরে কাঁদি । মুকুল ভাইয়ের মায়ের মৃত্যুর খবর জানার সাথে সাথে আমার মায়ের মুখটি চোখের সামনে ভেসে উঠে । মা; মা ই মায়ের কোন বিকল্প হয় না । আক্তার ভাইকে" বিজয়ীনি মা" শব্দমালাটি ব্যবহারের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ।
মোঃ আক্তারুজ্জামান মুকুল ভাইয়ের মায়ের মৃতু সংবাদে আমার বাবার মৃত্যুর দিনটির কথা মনে পড়ে গিয়েছিল| আমিও যারপর নাই আবেগ আপ্লুত হয়ে উঠেছিলাম| বশীর ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ|
তানি হক মা, স্রষ্টার অবধারিত নিয়মে সাড়া দিয়ে তুমি চলে গেছ লোকান্তরে। তুমি তোমার কর্ম, ভালবাসা, দায়িত্ব দিয়ে সব কিছু জয় করে গেছ। তোমার সন্তানদের হৃদয় জুড়ে তুমি অম্লান, অক্ষয়! তুমি বিজয়ীনির মুকুট সুশোভিত হয়ে ইহকাল পরকালে তোমার সন্তানদের হৃদয় সাম্রাজ্যে বিচরণ করবে!...নতুন ভাবে জানলাম ..সদ্ধেয় মুকুল ভাইয়া এবং ওনার জান্নাতি আম্মাকে ..কিছু বলার ভাষা পাচ্ছিনা ..শুধু ওনার পরিবার এবং আম্মার জন্য দোয়া করি ..আক্তারুজ্জামান ভাইয়াকে ধন্যবাদ ..ও সালাম
মোঃ আক্তারুজ্জামান তানি অনেক অনেক শুভাশীষ জেনো ভাই|

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

ফেব্রুয়ারী ২০২৪ সংখ্যার বিজয়ী কবি ও লেখকদের অভিনন্দন!i