০৯ ফেব্রুয়ারী,২০১২

শৈশব, কৈশোরে নানা বাড়ি বেড়ানো দিনগুলির কথা মনে পড়লে হৃদয় আন্দোলিত হয়। স্মৃতি জাগানিয়া দীর্ঘশ্বাস অস্ফুট শব্দ তোলে- আহা, সোনালী দিনগুলি আমার!

 

আমার নানা বাড়ি বেড়ানোর প্রধান আকর্ষণ ছিল- মতি মামা। মতি মামা আমার আপন মামা না। সে আমার মামার পড়শি ভাই। সেই হিসেবে আমি তাকে মামা বলে ডাকতাম। আমরা দুজন সমবয়সী, এমন কি একই ক্লাসে পড়তাম। আমি মামা বাড়ি যেতে মুখিয়ে থাকতাম মূলত মতি মামার সান্নিধ্য লাভের আশায়।

 

সুশ্রী, হৃষ্টপুষ্ট স্বাস্থ্যের অধিকারী মতি মামার গলার আওয়াজ ছিল অদ্ভুত রকমের মাধুর্যময়। নিজের গায়ের রং কাল বলে আমার মনঃকষ্ট ছিল, ছিল কিছু বিড়ম্বনাও। ক্লাস থ্রীতে যখন পড়ি একদিন স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ক্লাসের স্যার আমাকে গরু পিটা করে ছেড়েছিলেন। আমার অপরাধ- আমি নাকি বিড়ি খেয়ে খেয়ে ঠোঁট কাল করে ফেলেছি। প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধূমপায়ী জীবনে আজও আমি বুঝতে পারি না- স্যার কেন একবার ভাবলেন না একজন কাল মানুষের ঠোঁট কালো হওয়াটাই স্বাভাবিক।

 

এই বিশ্রী আমি সুদর্শন, রুপবান মতিমামার খুব ভক্ত ছিলাম। মতি মামার কবিতা লিখার হাত বড় সুন্দর ছিল। প্রাকযৌবনে তার লেখা স্বরচিত প্রেমের কবিতা শোনার আমি খুব ভাল শ্রোতা ছিলাম, তার সুমিষ্ট গলার আবৃত্তি মুগ্ধ হয়ে শুনতাম।

 

 

কাল বা বাস্তবতার থাবায় বন্দী হয়ে নানা বাড়ি বেড়ানোর আগের উন্মাদনা আর নিজের মধ্যে টের পাই না। মাঝে মধ্যে আমার মা মামা বাড়ি যান। একদিন মামা বাড়ি থেকে এসে মা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললেন- মতিটা আর বাঁচবে নারে!

 

মতি মামা! অনেক দিন মতি মামার সাথে আমার দেখা সাক্ষাত নেই। শুনেছিলাম সিভিল এভিয়েশনে ভাল একটা চাকুরী করে সে। আমার প্রিয় সেই মতি মামা আর বাঁচবে না!  

 

ক্যান্সার! মতি মামার ক্যান্সার হয়েছে। একটা চোখ, কয়েকটা দাঁতসহ তুলে ফেলতে হয়েছে মুখের এক অংশের মাংস। খুব বীভৎস হয়ে গেছে তাঁর চেহারা। ভয়ে কাছের লোকজনও তাঁর কাছে যায় না। এমনকি ডাক্তারদেরকেও অবাক করে দিয়ে মতি মামা এখন বেঁচে আছে।

 

আগে দেখেছি চৈত্রের উদাস দুপুরে আমাদের গ্রামগুলিতে মর্মর ধবনি তুলে, হাজারটা রকমারি গাছের শুকনা পাতা উড়িয়ে বাতাসের ঘূর্ণি ক্রমশঃ প্রকাণ্ড আর আকাশমুখি হতে হতে মাঠ ঘাট ছাড়িয়ে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে বয়ে যেত। আমার বুকের মাঝে একটা প্রকাণ্ড কষ্টের বাউকুড়ালি বয়ে যায়- মতি মামার সুশ্রী মুখটা প্রতিদিনই আমার হৃদয় আকাশে আরও অনেক অনেক প্রকট, সুস্পষ্ট হয়ে উঠে!

 

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রোদের ছায়া স্মৃতি কথা গুলো এমনিতেও ভালো লাগে এটাও বেশ লাগলো...আপনার লেখালেখির অনুপ্রেরণা কি মতি মামার কাছ থেকে ?
বশির আহমেদ স্মৃতির মনিকোঠায স্বযত্নে লালিত মতি মামার জন্য দরদ , তার সাথে সুখ স্মৃতির কিছু অংশ সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন । চলতি সংখ্যায় আপনার গল্প খুজে পাচ্ছিনা কেন ? মতি মামার জন্য সহমর্মিতা প্রকাশ করছি ।
মোঃ আক্তারুজ্জামান বশির ভাই, সংসার সামলে খুব একটা সময় দিতে পারি না| সামনের সংখ্যায় একটা লেখা দেয়ার আশা রাখি| আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই|
ভালো লাগেনি ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
Azaha Sultan দাদা, মতি মামার জন্য দোয়া ত অবশ্য আছে.........তবে এমন মামাবন্ধু আমারও ছিল..........মনে পড়ে তাদের কথা....খুব ভাল লাগল......
মোঃ আক্তারুজ্জামান সুলতান ভাই, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ|
ভালো লাগেনি ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
তানি হক moti mamar jonno doa roilo ..sei sathe ক্যান্সার akkranto sokol rugider jonno ..o ..khub valo thakun...
মোঃ আক্তারুজ্জামান তানি, তোমাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ|
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) অনেক করুক একটা স্মৃতিকথা! পড়তে পড়তে আমার নিজের বড়মামার কথা মনে পড়ে গেল. আমার বড় মামাও আর বেচে নেই. কিছু স্মৃতি আছে যা ভোলা যায় না.
মোঃ আক্তারুজ্জামান শাওন ভাই, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ|
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) মতি মামা কি এখন বেছে আছেন ভাই?
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
মোঃ আক্তারুজ্জামান জি শাওন ভাই, সবাইকে অবাক করে দিয়ে মতি মামা এখনো বেছে আছেন|
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) আল্লাহ উনার উপরে রহম করুন!
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

মার্চ ২০২৪ সংখ্যার বিজয়ী কবি ও লেখকদের অভিনন্দন!i